Close

আহ্নিক গতি কাকে বলে? আহ্নিক গতির ফলাফল আলোচনা কর

আহ্নিক গতি কাকে বলে

সাধারণভাবে বলতে গেছেল, আহ্নিক গতি হলো, পৃথিবীর নিজ অক্ষে বা মেরু রেখায় পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে আবর্তন গতিকে আহ্নিক গতি বলা হয়।

পৃথিবী সূর্যকে কেন্দ্র করে নিজ অক্ষে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে আবর্তন করতে সময় লাগে ২৩ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট ৪ সেকেন্ড বা ২৪ ঘণ্টা অর্থাৎ এক দিন। আবর্তনের এই সময়কে এক সৌরদিন বলা হয় এবং আবর্তনকে বলা হয় আহ্নিত গতি বা দৈনিক গতি।

সর্বপরি, পৃথিবী তার নিজ অক্ষে বা মেরু রেখায় সব সময় আবর্তন করে। এই আবর্তন প্রক্রিয়াটা পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে হয়ে থাকে এবং পৃথিবী যে গতিতে আবর্তন করে সেই গতিকে আহ্নিক গতি বলা হয়।

পৃথিবীর আহ্নিক গতির বেগ কত?

পৃথিবীর আহ্নিক গতির বেগ সব স্থানে সমান হয় না। নিরক্ষরেখায় পৃথিবীর আহ্নিক গতির বেগ সব থেকে বেশি থাকে। তখন ঘন্টায় ১৬১০ কিলোমিটারের বেশি গতি বেগ থাকে। আবার নিরক্ষরেখা থেকে উত্তরে কিংবা দক্ষিণে এই গতিবেগ ক্রমশ কমতে থাকে৷ এভাবে পৃথিবীর উত্তর ও দক্ষিণ মেরুতে আহ্নিক গতিবেগ শূন্যের কাছাকাছি থাকে।

আহ্নিক গতির ফলাফল

পৃথিবীতে আহ্নিক গতির ফলে কি পরিবর্তন হয়, তা নিম্নে উপস্থাপন করা হলো :

আহ্নিক গতির ফলাফল

১। দিবা-রাত্রি সংঘটন

প্রথমত, আহ্নিক গতির ফলে পৃথিবীতে দিন ও রাত হয়। পৃথিবীর নিজস্ব কোন আলো নেই এবং সূর্যের আলোতেই পৃথিবী আলোকিত হয়। পৃথিবী গোলাকার হওয়ার ফলে সূর্যের আলো একই সময়ে ভূপৃষ্ঠের সকল অংশে পৌছাতে পারে না। আবর্তনের প্রক্রিয়ার সময় পৃথিবীর যে অংশ বা মেরুতে আলো পড়ে সেখানে দিন হয় এবং যে অংশে অন্ধকারে থাকে সেখানে রাত হয়।

২। বায়ুপ্রবাহ ও সমুদ্রের স্রোত

আহ্নিক গতির ফলে সমুদ্রস্রোত ও বায়ুপ্রবাহের ওপর যথেষ্ট প্রভাব পরে। ফেরেলের সূত্র অনুসারে পৃথিবীর পশ্চিম হতে পূর্ব দিকে আবর্তন হওয়ার কারণে সমুদ্রস্রোত ও বায়ু প্রবাহ সোজা উত্তর-দক্ষিণে প্রবাহিত না হয়ে উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে যায়।

৩। সময় গণনার উপায়

আহ্নিক গতির ফলে সময় গণনার সুবিধা হয়। একবার পূর্ণ আবর্তনে ২৪ ঘণ্টা হয়, সেই হিসেবে ঘণ্টা, মিনিট ও সেকেন্ডে বিভক্ত নির্নয় করে সময় গণনা করা হয়।

৪। আকর্ষণ প্রভাব

আহ্নিক গতির জন্য পৃথিবীর কোন একটি মেরু বা অংশ চাঁদের দিকে থাকে, চাঁদের আকর্ষণে সেই অংশের জলভাগে জোয়ার হয়।

৫। চির অন্ধকার ও আলো থেকে মুক্ত

আহ্নিক গতির পলে পৃথিবীতে দিন রাত আসে অর্থাৎ, এটা না থাকলে পৃথিবীর অর্ধাংশ চিরকাল রাত ও বিপরীত অর্ধাংশ চিরকাল দিন থাকত।

সমাপনী

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছে যে, আহ্নিক গতি কাকে বলে কিংবা এর ফলাফল কি! যদি এ বিষয়ে আরও কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে কমেন্ট করতে ভুলবেন না।

আরো পড়ুন

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *