Close

ক্ষুদ্র শিল্প ও কুটির শিল্প কাকে বলে? উদাহরণ ও বৈশিষ্টসহ আলোচনা।

ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, আজকের পর্বে আমরা আলোচনা করতে যাচ্ছি ক্ষুদ্র শিল্প ও কুটির শিল্প কি? নিম্নে ক্ষুদ্র শিল্প ও কুটির শিল্পে বিনিয়োগের পরিমাণ, বৈশিষ্ট ও উদাহরণসহ আলোচনা করা হলো।

ক্ষুদ্র শিল্প কাকে বলে

ক্ষুদ্র শিল্প কাকে বলে বুঝায় স্বল্প পুঁজি ও স্বল্পসংখ্যক কর্মচারী/শ্রমিক নিয়ে এক মালিকানা, অংশীদারি অথবা সমবায়ের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা ছোট আকাড়ের শিল্পকে ক্ষুদ্র শিল্প বলে। এসব প্রতিষ্ঠানে জমি ও কারখানা ভবন ব্যতিত অন্যান্য স্থায়ী সম্পদের মূল্য বা প্রতিস্থাপন ব্যয় ১.৫০ কোটি টাকা কম হয়ে থাকে।

বিনিয়োগের পরিমাণঃ ক্ষুদ্র শিল্পে বিনিয়োগের পরিমাণ সর্বোচ্চ ১০ কোটি টাকা হয়ে থাকে।

ক্ষুদ্র শিল্পের উদাহরণ

  1. খাদ্যজাত শিল্পঃ আটা, ময়দা, মুড়ি-চিড়া, শুটকি, সেমাই, চিনি, মাছ, তেল, চাল, চকলেট প্রস্তুত ইত্যাদি।
  2. বস্ত্র শিল্পঃ থান কাপড়, শাড়ি, লুঙ্গি, বেডশিট, গামছা প্রস্তুত।
  3. পাটজাত শিল্পঃ পাটের ব্যাগ, সুতা, কার্পেট ইত্যাদি।
  4. বন শিল্পঃ বাঁশ, কাঠ, কাঠের খেলনা, আসবাপত্র, করাত কল ইত্যাদি।
  5. মুদ্রণ ও প্রকাশনাঃ কাগজ, প্যাকিং ও কার্টন তৈরি
  6. চামড়া ও রাবার শিল্পঃ জুতা কারখানা ও চামড়ার তৈরি পন্য।
  7. ইস্পাত ও প্রকৌশল শিল্পঃ অটো মোবাইল সামগ্রী, কৃষি যন্ত্রপাতি, মিল কারখানার যন্ত্রপাতি তৈরি।
  8. কেমিক্যাল ও ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্পঃ পেইন্ট, রং, প্লাস্টিক, সার কারখানা, ঔষধ ইত্যাদি।
  9. সিরামিক শিল্পঃ কাঁসের ও চিনামাটির জিনিসপত্র তৈরি। ও
  10. হিমাগার শিল্প

কুটির শিল্প কাকে বলে

যে সমস্ত শিল্পে কুটিরের মধ্যে অর্থাৎ কোনো ছোটখাটো ঘর অথবা ছোটখাটো দোকানকে কারখানা হিসেবে ব্যবহার করে পণ্যসামগ্রী উৎপাদন হয়ে থাকে তাকেই কুটির শিল্প বলা হয়। কুটির শিল্পে পারিবারিক সদস্যদের শ্রম এবং পারিবারিক পরিবেশে বিদ্যুৎ ও ভারী যন্ত্রপাতির ব্যবহার না করে হাতের সাহায্যে এসব দ্রব্য দ্রব্যসামগ্রী উৎপাদন করা হয়।

বিনিয়োগের পরিমাণঃ কুটির শিল্পে বিনিয়োগের পরিমাণ সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা হতে পারে।

বিশ্বের প্রায় অধিকাংশ দেশেই কমবেশি কুটির শিল্পের অস্থিত্ব বিদ্যমান রয়েছে। উন্নত দেশে এগুলো ধনীরা ফ্যাশন কিংবা অবসরের শখ হিসেবে করে থাকে। আমাদের দেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে কুটিরশিল্পকে তাদের জীবিকার উৎস হিসেবে মনে করে।

READ MORE

কুটির শিল্পের উদাহরণ

নিম্নে কুটির শিল্পের কিছু উদাহরণ তুলে ধরা হলো:

  1. মৃৎশিল্পঃ মাটির হাড়ি-পাতিল বা জিনিসপত্র তৈরি
  2. কাঠ শিল্পঃ কাঠের মিস্ত্রির আসবাবপত্র তৈরি গৃহ নির্মাণ ইত্যাদি
  3. স্বর্ণের কারিগরঃ সোনার গহনা তৈরি
  4. কামার শিল্পঃ দা, কাঁচি, হাতুড়ি বানানো
  5. বাঁশ-বেত শিল্পঃ বাঁশ ও বেতের জিনিসপত্র তৈরি
  6. দর্জিঃ ঘরে বসে জামাকাপড় তৈরি

কুটির শিল্পের বৈশিষ্ঠ্য

  • পরিবার কেন্দ্রিকঃ কুটির শিল্প মুলত পরিবারে সদস্যদের নিয়েই পরিচালিত হয়ে থাকে।
  • স্বল্প মূলধনঃ কুটির শিল্প গঠনে খুব বেশি মূলধনের প্রয়োজন হয় না, স্বল্প মূলধনেই গঠন করা সম্ভব। এখানে উদ্যোক্তাই মূল কারিগর হিসেবে কাজ করে থাকে।
  • অবস্থানঃ কুটির শিল্প যেকোন স্থানে স্থাপন করা যায়। সাধারণত উদ্যোক্তা নিজ বাড়িতে অথবা নিকটতম কোন বাজারে এটা পরিচালনা করে থাকেন।
  • আয়তনঃ কুটির শিল্প আয়তন খুব ছোট হয়ে থাকে এবং সাধারণত পারিবারিক আঙ্গিনায় হয়ে থাকে।
  • কাঁচামালঃ – কুটির শিল্পে পণ্য সামগ্রী উৎপাদনের জন্য স্থানীয় কাঁচামাল ব্যবহার করা হয়। এর ফলে দেশের কাঁচামাল ও প্রাকৃতিক সম্পদের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত হয়।

অতি ক্ষুদ্র শিল্প কাকে বলে

যদি কোন ক্ষুদ্র শিল্পের জমি ও কারখানা ভবন ছাড়া স্থায়ী সম্পদের মূল্য প্রতিস্থাপন ব্যয়সহ ৫ থেকে ৫০ লাখ টাকার মধ্যে অথবা ১০ থেকে ২৪ জন বা তার কমসংখ্যক শ্রমিক নিয়ে কাজ করা হয়, এমন শিল্প-কারখানাকে অতি ক্ষুদ্র শিল্প বলা হয়।

আরও পড়ুন

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!